শহীদ ইফাতের শেষ বিদায়: মায়ের স্মৃতিতে অমলিন এক মুহূর্ত
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ হওয়া ১৬ বছর বয়সী ইফাত হাসানের মা কামরুন নাহার এখনও ছেলের শেষ মুহূর্তের আবেগঘন স্মৃতিগুলো আঁকড়ে বেঁচে আছেন। প্রিয় পুত্রের শেষ বিদায়ের দিনগুলো স্মরণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ইফাত আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছিল, যা আমি প্রতিনিয়ত অনুভব করি। সেই মুহূর্তগুলো আমার হৃদয়ে অমলিন।’
২০ জুলাই, যখন ইফাত বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল, তার মা তাকে জড়িয়ে ধরে বাইরে যেতে না দেওয়ার চেষ্টা করেন। উদ্বিগ্ন মাকে শান্ত করতে ইফাত মায়ের কপালে চুমু খেয়ে বলে, ‘মা, চিন্তা করো না। আমি খুব দূরে যাব না, আমি শিগগিরই ফিরে আসব।’ কিন্তু সেই ফিরে আসা হয়নি। সেদিন বিকেলেই পুলিশের গুলিতে ইফাত শহীদ হন।
যাত্রাবাড়ির এ কে স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্র ইফাত আহত এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ইফাতের মা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমার সুস্থ ছেলেটা বেরিয়ে গেল, কিন্তু আর ফিরে আসেনি। তার শেষ চুমুর স্পর্শ এখনও আমার কপালে টের পাই।’
ইফাত ছিল তার মায়ের একমাত্র ছেলে। পিতার মৃত্যুর পর তিন সন্তানকে নিয়ে মা কামরুন নাহার একাই জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘ইফাত কখনও আমাকে না জানিয়ে বাইরে যেত না, কারণ সে জানত আমি তার জন্য সবসময় উদ্বিগ্ন থাকি।’ আন্দোলনে যাওয়া নিয়ে মা তাকে বারবার অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু ইফাত বলেছিল, ‘আমরা ঘরে বসে থাকলে দেশ পরিবর্তন হবে না।’
ইফাতের মা বলেন, ‘তার নিষ্পাপ লাশটি দেখে আমি নিজেকে সামলাতে পারিনি। আমি কেবল চাই, আমার ছেলের হত্যার বিচার হোক।’