বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, যার ফলে দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে আর আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের সমাবেশ, মিছিল, গোপন বৈঠক বা অনলাইনে দলটির পক্ষে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করলে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা হবে।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেছেন, “নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো কার্যক্রম ঢাকা রেঞ্জে চলতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে এসপিদের স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “কাগজে-কলমে নিষিদ্ধ ঘোষণা না হলেও আওয়ামী লীগ এখন কার্যত নিষিদ্ধ দলের তালিকায়।” এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় দলটির পক্ষে পোস্ট বা মন্তব্য করলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাইবার অপরাধ দমন শাখার এক কর্মকর্তা জানান, “ফেসবুক-ইউটিউবে আওয়ামী লীগের পক্ষে কেউ কিছু বললে, পোস্ট দিলে বা মন্তব্য করলে—এমনকি বিদেশে বসে করলেও—তাদের বিরুদ্ধে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করা যাবে। দেশে ফিরলেই গ্রেপ্তার হবে।”
সাবেক আইজিপি নূরুল হুদা বলেন, “নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারে আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না। সরকারের জারি করা আদেশ অনুযায়ী পুলিশ আইনগত বৈধতা পেয়েছে।” সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, “পেনাল কোডের ১৮৮ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার কোনো আদেশ জারি করলে তা অমান্যকারীকে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। এখন এই ধারা অনুযায়ী গ্রেপ্তার হবে।”
এদিকে, অনলাইনেও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি জানান, শুধু অফলাইনে নয়, সাইবার স্পেসেও দলটির উপস্থিতি বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “পরিপত্র জারি হলেই বিটিআরসির মাধ্যমে মেটাসহ অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে চিঠি পাঠানো হবে। ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার—সবখানেই দলটির কার্যক্রম বন্ধ করা হবে।”
ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নামের দলটির ভেরিফায়েড পেজে বর্তমানে প্রায় ৪০ লাখ ফলোয়ার রয়েছে। সেটিও নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার
সূত্রঃ ইত্তেফাক