ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে বর্তমানে কর্মী সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা দেশটির অর্থনীতিকে কিছুটা স্থবির করে ফেলেছে। এই সংকট সমাধানে জার্মানি এবার একটি আগ্রাসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যার মাধ্যমে লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে দেশটির শ্রম বাজারে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, যখন ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলো কঠোর অভিবাসন নীতি অনুসরণ করছে, তখনই জার্মানি তার শ্রম বাজারে অভিবাসীদের জন্য নতুন সুযোগ খুলে দিয়েছে।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শেষ নাগাদ দেশটি ২ লাখ দক্ষ কর্মীকে ভিসা প্রদান করবে। জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার জানিয়েছেন, দক্ষ তরুণরা আরও সহজে জার্মানিতে তাদের পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে পারবেন, এবং অভিজ্ঞ পেশাদাররা দ্রুত চাকরি খুঁজে পাবেন। গত বছর ১ লক্ষ ৭৭ হাজার পেশাদার ভিসা ইস্যু করেছিল জার্মানি, তবে এবার তা ১০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এটি একটি পদক্ষেপ যা দীর্ঘমেয়াদি কর্মী সংকট কাটাতে এবং ভিসা সংক্রান্ত নিয়মকানুন শিথিল করতে নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে জার্মানিতে প্রায় ১৩ লাখ ৪০ হাজার কর্মসংস্থান খালি রয়েছে, যা দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। গত পাঁচ বছরে জার্মানিতে ১৬ লাখ নতুন চাকরি সৃষ্টি হয়েছে, যার মধ্যে ৮৯ শতাংশ চাকরি পেয়েছেন বিদেশি কর্মীরা।
এছাড়া, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য ‘অপরচুনিটি কার্ড’ নামে একটি নতুন স্কিম চালু করেছে জার্মানি, যার মাধ্যমে ভাষাগত দক্ষতা, পেশাগত অভিজ্ঞতা এবং বয়সের ভিত্তিতে এক বছরের ভিসা প্রদান করা হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বাইরে থেকেও লোকেরা এই কার্ডের মাধ্যমে জার্মানিতে চলে আসতে পারবেন এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি খুঁজে পেতে সক্ষম হবেন।
এছাড়া, শিক্ষার্থী ভিসার পরিমাণও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে জার্মান সরকারের। ২০২৫ সাল নাগাদ শিক্ষার্থী ভিসার সংখ্যা ২০ শতাংশ বাড়ানো হবে এবং ভবিষ্যতে তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।