ভারতের হামলায় পাকিস্তানে প্রাণহানি বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে

কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে, হামলায় পাকিস্তানে নিহত ২৬

কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সামরিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার (৭ মে) ভোরে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে ভারতের চালানো সমন্বিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী।

এএফপিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানান, সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণেই এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, নিহতদের মধ্যে সবাই বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। এর আগে তিনি আটজনের মৃত্যুর তথ্য দিলেও পরে সংখ্যা বাড়িয়ে ২৬ জনের কথা জানান।

হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বেসামরিক স্থাপনা

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের হামলা পাকিস্তানের ছয়টি অঞ্চলে চালানো হয়। এসব এলাকায় ২৪টি বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। আক্রান্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশের আহমেদপুর শারকিয়া, মুরিদকে, শিয়ালকোট, শকরগড় এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের কোটলি ও মুজাফফরাবাদ।

জেনারেল শরীফ জানান, শুধুমাত্র আহমেদপুর শারকিয়াতেই ১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে এক শিশুকন্যা, সাতজন নারী ও চারজন পুরুষ। আহতদের মধ্যে রয়েছেন নারী ও পুরুষ উভয়ই।

মুজাফফরাবাদের বিলাল মসজিদে হামলায় নিহত হয়েছেন তিনজন। একইভাবে কোটলির আব্বাস মসজিদে ১৬ ও ১৮ বছর বয়সী দুই তরুণ নিহত হয়, আহত হন আরও দুজন।

জরুরি অবস্থা ও পাল্টা প্রতিক্রিয়া

হামলার পর পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতালসহ জরুরি সেবা সংস্থাগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ।

পাকিস্তানের দাবি, এই হামলার জবাবে তাদের পাল্টা অভিযানে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। আইএসপিআরের ডিজি জানান, ভারতের তিনটি রাফায়েল জেট, একটি মিগ-২৯, একটি এসইউ বিমান এবং একটি হেরন ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। জম্মু, আখনুর, শ্রীনগর ও অবন্তীপুর এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়।

ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত ১০ জন ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে

দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে এই নতুন উত্তেজনা আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। কূটনৈতিক মহল পরিস্থিতি শান্ত করার আহ্বান জানালেও দুই দেশের মধ্যে সামরিক কার্যক্রম ক্রমেই বাড়ছে।

সূত্রঃ কালবেলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *