বিশাল সুযোগ, ৩ লাখ কর্মী নিয়োগ করবে জার্মানি

জার্মানি ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ এবং এটি অনেক মানুষের জন্য একটি স্বপ্নের গন্তব্য। তৃতীয় বিশ্বের মানুষের জন্য, বিশেষত বাংলাদেশিদের, জার্মানিতে অভিবাসন একটি বড় লক্ষ্য, কারণ তারা মনে করেন সেখানে পা রেখেই অর্থনৈতিক উন্নতি সম্ভব। ইউরোপের অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে জার্মানির প্রতি এ আকর্ষণটি কোনভাবে অবাস্তব নয়।

প্রতি বছর বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য জার্মানিতে যাওয়ার চেষ্টা করে। কেউ কেউ অবৈধ পথে দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টা করেন, যার ফলে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কষ্টের সম্মুখীন হন। তবে এবার জার্মানিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য একটি সুখবর এসেছে। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, তারা দেশটির কর্মী সংকট দূর করতে বড় সংখ্যক বিদেশী কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই লক্ষ্যে তারা কর্মসংস্থান আইনও সংস্কার করেছে, যার মাধ্যমে ইউরোপে অভিবাসন প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন হাজার হাজার অভিবাসী।

জার্মান সংবাদমাধ্যম একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, জার্মানি চলতি বছরের মধ্যে অতিরিক্ত ২ লাখ ৮৮ হাজার দক্ষ বিদেশী কর্মীকে ভিসা প্রদান করবে। জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার জানিয়েছেন, দক্ষ তরুণরা এখন আরও সহজে জার্মানিতে তাদের পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ শেষ করতে পারবে এবং অভিজ্ঞ কর্মীরা দ্রুত সেখানে কাজ পেতে সক্ষম হবেন।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যদি অভিবাসন নিশ্চিত না হয়, তবে ২০৪০ সালের মধ্যে জার্মানির কর্মক্ষম জনসংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ কমে যাবে। এর ফলস্বরূপ, ২০২৩ সালে কর্মসংস্থান আইন সংস্কার করে বিদেশী দক্ষ কর্মীদের জন্য নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। ন্যান্সি ফেজার ২০২৩ সালে এই সংস্কৃত আইনের সময় এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক অভিবাসন আইন হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।

বার্টেলসম্যান ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০৪০ সালের মধ্যে জার্মানির কর্মক্ষম জনসংখ্যা ৪৬.৪ মিলিয়ন থেকে কমে ৪১.৯ মিলিয়নে দাঁড়াবে এবং ২০৬০ সালের মধ্যে এটি আরও কমে ৩৫.১ মিলিয়নে পৌঁছাতে পারে। তাই প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ ৮৮ হাজার দক্ষ বিদেশী কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।

বার্টেলসম্যানের অভিবাসন বিশেষজ্ঞ সুজানে শুলজ বলেছেন, শ্রম বাজারে বেবি বুমার্স প্রজন্মের অবসরের কারণে একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জার্মানির দক্ষতার বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণ এবং অভিবাসন অত্যন্ত জরুরি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান অভিবাসন প্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে এবং এই প্রক্রিয়াটি আরো দ্রুত ও স্বচ্ছ করতে হবে। বিদেশী কর্মীদের চাকরির বাজারে সহজ প্রবেশাধিকার এবং তাদের যোগ্যতার সঠিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি, অভিবাসীদের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোরও প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *