“পারমাণবিক হামলার ঝুঁকি মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করছে রাশিয়া”
বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের ধরন পরিবর্তিত হচ্ছে, আর সম্মুখ যুদ্ধের পরিবর্তে বিভিন্ন দেশ এখন আধুনিক বিমান হামলা এবং রণকৌশলে বেশি মনোযোগী হচ্ছে। এমন সময়ে, পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাশিয়া পারমাণবিক বোমার আঘাত, তেজস্ক্রিয়তা ও অন্যান্য হুমকি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সুরক্ষিত আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করছে। রাশিয়ার জরুরিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর নাম “কেইউবি-এম” (KUB-M)। পারমাণবিক হামলার ফলে সৃষ্ট বিপর্যয় থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সুরক্ষা প্রদান করতে সক্ষম হবে এসব আশ্রয়কেন্দ্র।
এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো বিস্ফোরণ, প্রচলিত অস্ত্রের আঘাত, ভবনের ধ্বংসাবশেষ, বিপজ্জনক রাসায়নিক ও অগ্নিকাণ্ড থেকে মানুষকে সুরক্ষা দিতে পারবে। কেইউবি-এম আশ্রয়কেন্দ্র দেখতে জাহাজের কনটেইনারের মতো এবং এতে দুটি মডিউল রয়েছে। একটি মডিউলে অন্তত ৫৪ জন আশ্রয় নিতে পারবে, অপরটি কারিগরি সুবিধার জন্য ব্যবহৃত হবে। একাধিক মডিউল যুক্ত করে একটি বৃহত্তর আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা সম্ভব।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, এই আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের উদ্দেশ্য বর্তমান সংকটের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। তবে, সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার পর থেকে ইউক্রেন প্রথমবারের মতো রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে।
১৯ নভেম্বর রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর একটি সামরিক স্থাপনায় আগুন ধরে যায়। তবে দ্রুত আগুন নেভানো হয় এবং কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনের আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (ATACMS) ব্যবহার করে রাশিয়ার ব্রিয়ানস্ক এলাকায় হামলা চালানো হয়। পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে, তবে ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষে একটি সামরিক স্থাপনায় আগুন লেগে যায়।
এ হামলার পর ইউক্রেনের গণমাধ্যমেও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের খবর প্রকাশিত হয়েছে, যদিও ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পূর্বে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে তারা ব্রিয়ানস্কে একটি গোলাবারুদের গুদামে হামলা চালিয়েছে, তবে সেই হামলায় ATACMS ব্যবহৃত হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে তারা কোনো তথ্য দেয়নি।