সম্প্রতি ক্রীড়াঙ্গনে একটি বড় বিতর্কের জন্ম হয়েছে, বিশেষত আন্তর্জাতিক ফুটবলে রাশিয়া এবং ইসরায়েলের প্রতি বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। গত কয়েক বছরে ফুটবলে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে, যার মধ্যে রাশিয়ার জাতীয় ফুটবল দল এবং ক্লাবগুলোকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বিশেষ গুরুত্ব অর্জন করেছে। ফিফা এবং উয়েফা ২০২২ সালের ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর থেকেই রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করেছে, যার ফলে রাশিয়ান খেলোয়াড়রা বিশ্বকাপসহ অন্য কোনো বড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারছেন না।
এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার ক্রীড়াজগতের জন্য হতাশাজনক হলেও, একই সময়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেওয়া নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। গাজায় ইসরায়েলের সহিংসতার পরেও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলো ইসরায়েলি দল ও খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি বা নিন্দা জানায়নি। ফিলিস্তিন ফুটবল ফেডারেশন (পিএফএ) ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে দাবি করেছে যে, ইসরায়েল ফিফার নিয়ম ভঙ্গ করেছে এবং তাদের সদস্যপদ অবিলম্বে স্থগিত করা উচিত।
এ বিষয়ে পিএফএ সভাপতি জিব্রিল রুজব ফিফা কংগ্রেসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। ফিফা সভাপতি জিয়ানি ইনফান্তিনো বলেছেন যে, এই বিষয়টি নির্ধারণে একটি স্বাধীন আইনি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হবে এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে পিএফএ অভিযোগ করেছে যে, ইসরায়েল তাদের বিরুদ্ধে হুমকি দিয়েছে এবং তাদের আবেদন প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে। ফিলিস্তিনের ক্রীড়া নেতারা দাবি করেছেন যে, গাজার ফুটবল অবকাঠামো ধ্বংস হওয়া এবং ইসরায়েলের সহিংসতা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ফিফার বিধি-বিধানের পরিপন্থী।
এই পরিস্থিতি ফুটবল এবং ক্রীড়া বিশ্বে ন্যায়বিচারের প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। যখন স্পোর্টস আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে শান্তি ও সংহতির বার্তা প্রদান করতে পারে, তখন এমন বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সঠিক পদক্ষেপের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি ইসরায়েলকে সেই ধরনের নিষেধাজ্ঞা না দেওয়া ক্রীড়াজগতে ন্যায়বিচারের অভাব ও বৈষম্য তুলে ধরেছে।
ফুটবল কেবল একটি খেলা নয়, এটি সমাজের মেরুদণ্ডের একটি অংশ, যেখানে প্রতিটি দেশের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা অপরিহার্য। ক্রীড়া সংস্থাগুলোর ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তগুলোই আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে ন্যায়বিচারের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।