মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল এখনো ঘোষণা করা না হলেও, ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ২৭০ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট নিশ্চিত করেছেন, যা তাকে আবারও হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে পারে।
ট্রাম্পের সম্ভাব্য জয়ের প্রভাবে বৈশ্বিক পণ্যবাজারে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার তেল, ধাতু এবং শস্যসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম কমে গেছে, কারণ ডলার শক্তিশালী হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, এদিন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও সয়াবিনের দাম প্রায় ১.৫ শতাংশ কমেছে। এশীয় বাজারে ডলারের উত্থানের কারণে তামার দাম কমে গেছে ২ শতাংশের বেশি, তবে মূল্যবান ধাতু সোনার দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
স্যাংক্সো ব্যাংকের কমোডিটি স্ট্র্যাটেজির প্রধান ওলে হ্যানসেন বলেছেন, “এটি মার্কিন নির্বাচনের ভোট গণনা এবং প্রাথমিক ফলাফলের প্রতিক্রিয়া, যেখানে ট্রাম্পের বিজয়ের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে।” তিনি আরও জানান, ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় এলে চীনা পণ্যের ওপর ট্যারিফ আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ধাতুর বাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ চীন তামা, লোহা আকরিক এবং ইস্পাতের অন্যতম বড় ভোক্তা।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগের কারণে তেলের দাম কমছে, কারণ ট্রাম্পের ট্যারিফগুলো বৈশ্বিক চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে সমর্থন দিতে পারে।
লাং স্টিল রিসার্চ সেন্টারের উপ-পরিচালক গে সিন জানিয়েছেন, ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হলে চীনের ইস্পাতের দাম আরও কমে যেতে পারে, যার ফলে চীনা ইস্পাত নির্মাতারা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
রয়টার্স আরও জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন যদি ইরানের তেল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা কড়াকড়ি করে, তাহলে বৈশ্বিক তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে। বর্তমানে ইরান প্রতিদিন প্রায় ১.৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রপ্তানি করে।
যুক্তরাষ্ট্র চীনে সর্বাধিক সয়াবিন রপ্তানি করে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে কৃষি খাত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে, কারণ চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ হলে চীন পাল্টা শুল্ক চাপিয়ে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিনের ওপর।
গত বৃহস্পতিবার স্পট গোল্ডের দাম রেকর্ড ২,৭৯০.১৫ ডলারে পৌঁছায় এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সোনার দাম সেই অবস্থানে স্থির রয়েছে। সোনা ভূরাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে একটি সুরক্ষামূলক পণ্য হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সুদের হার কমলে এর দাম বৃদ্ধি পায়।