সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরাম
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। সংগঠনটির কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর অভিযোগ করেছেন, সংশোধিত অধ্যাদেশের মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরাসরি সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। তিনি বলেন, ঈদের পর দেশব্যাপী সরকারি অফিসে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সোমবার (২ জুন) সচিবালয়ে দুই উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করার আগে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, “সরকারি কর্মচারীদের আনুগত্য থেকে বিচ্যুত করার উদ্দেশ্যে অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই অধ্যাদেশ কর্মচারীবান্ধব নয় এবং তা বাতিল করতেই হবে।”
ঐক্য ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামও বলেন, “সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ কোনোভাবেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে নয়। অন্ধকারে রেখে এ ধরনের আইন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।”
সোমবারও পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১১টায় সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। এ সময় তাঁরা অধ্যাদেশকে ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেন এবং তা অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানান।
এর আগে, ১ জুনও আন্দোলনকারীরা সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং পরে খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, এবং পরিবেশ উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি জাপান সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। সরকারি সূত্র জানায়, মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করবেন। আন্দোলনরত কর্মচারীরা আশাবাদী, প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে এই বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া মিলবে।
প্রসঙ্গত, ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধনের খসড়া অনুমোদিত হয় এবং ২৫ মে সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়। এরপর থেকেই সচিবালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা এটি ‘নিবর্তনমূলক’ আখ্যা দিয়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন। চার দিনের টানা আন্দোলনের পর সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার ইঙ্গিত আসায় আন্দোলনে সাময়িক পরিবর্তন আনা হয়। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মচারীরা এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন।
সূত্রঃ ইত্তেফাক