মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত, আরেকজনের লাশ ফেরত মেলেনি ১৯ দিনেও
ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) ভোরে ভারতীয় সীমান্তের উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদগা থানার মধুপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি হলেন ওবাইদুল ইসলাম (৩৬), যিনি মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং হানেফ আলীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে ওবাইদুলসহ ৭-৮ জনের একটি দল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এ সময় ভারতের মধুপুর বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে অভিযান চালায়। অন্যরা পালিয়ে এলেও ওবাইদুল ধরা পড়েন। রাত ১টার দিকে গোলাগুলির শব্দও শুনেছেন এলাকাবাসী।
গ্রাম পুলিশ সদস্য ওমর আলী জানান, খবর পেয়ে তিনি ওবাইদুলের বাড়িতে যান। পরিবারের সদস্যরা কান্নাকাটি করছেন এবং আশঙ্কা করছেন ওবাইদুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
যাদবপুর ইউনিয়নের মেম্বার বাবুল হোসেন জানান, সীমান্তের ওপার থেকে গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার পর থেকেই গ্রামে ওবাইদুল নিখোঁজ থাকার খবর ছড়িয়ে পড়ে। ভারতীয় সীমানায় পড়ে থাকা লাশটি তারই হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
বিজিবি যাদবপুর বিওপির কমান্ডার হাবিলদার মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারা ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন, যদিও এখন পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, মধুপুর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তের ভেতরে একটি মরদেহ পাওয়া গেছে, তবে সেটি বাংলাদেশি না ভারতীয় তা নিশ্চিত নয়। লাশটি ভারতের বাগদা থানার পুলিশ উদ্ধার করেছে।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল একই উপজেলার পলিয়ানপুর সীমান্তে ওয়াসিম নামে আরেক বাংলাদেশিকে বিএসএফ হত্যা করে ইছামতি নদীতে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। নিহত ওয়াসিম বাঘাডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে। ঘটনার ১৯ দিন পেরিয়ে গেলেও তার লাশ এখনো দেশে ফেরত আসেনি।
ওয়াসিমের ভাই মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যাওয়ার পর বিএসএফ তাকে আটক করে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়। সঙ্গীরা ফিরে এলেও ওয়াসিম নিখোঁজ ছিলেন। পরে জানা যায়, তাকে হত্যার পর লাশ গোপন করা হয়েছে।
বিজিবি লাশ ফেরত চাইলেও ভিসা জটিলতা এবং প্রমাণ উপস্থাপনের শর্তে এখনো পরিবারটি মরদেহ আনতে পারেনি। ওয়াসিমের পরিবার জানায়, ভারতে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করার মতো সক্ষমতা তাদের নেই।
সূত্রঃ কালবেলা