নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ওপর চড়-থাপ্পড় ও ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে আদালতে হাজিরা শেষে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ আইনজীবী ও জনতা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালায়। পরে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং তাকে দ্রুত প্রিজন ভ্যানে তুলে নেয়।
ঘটনার পেছনে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ চলাকালে মাদ্রাসাছাত্র হাফেজ সোলাইমান (১৯) হত্যাকাণ্ডের মামলা, যেখানে আনিসুল হক ৩ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি। শুনানি শেষে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈন উদ্দিন কাদির তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতে নিহত সোলাইমানের ভগ্নিপতি ও মামলার বাদী শামীম কবির উপস্থিত ছিলেন।
রিমান্ড শুনানি শেষে এজলাস থেকে বেরোনোর সময় আইনজীবীদের একটি অংশ তাকে চড়-থাপ্পড় মারে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে ঘিরে দ্রুত আদালত চত্বর ত্যাগ করান।
নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার প্রধান বলেন, আনিসুল হক তার মন্ত্রিত্বকালীন সময়ে জেলার বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করেছিলেন এবং আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করেছিলেন। এছাড়া আইনজীবী সমিতিকে প্রতিশ্রুত অনুদানও তিনি দেননি। এসব কারণে স্থানীয় আইনজীবীদের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমে ছিল, যা আদালত চত্বরে বিস্ফোরিত হয়েছে।
এদিকে হাফেজ সোলাইমান হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ মোট ৫১ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সড়কে ককটেল বিস্ফোরণ, গুলি ও মারধরের ঘটনা ঘটায়। এসব হামলায় হাফেজ সোলাইমান গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এসব হামলার পেছনে আনিসুল হকের প্রত্যক্ষ নির্দেশ ছিল।
সূত্রঃ ইত্তেফাক