নাহিদ ইসলাম: সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব, ভারতকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে
বিবিসি হিন্দিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা দেশের নাগরিক এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তিনি বলেন, ভারতের এ বিষয়ে মন্তব্য করার কোনো প্রয়োজন নেই, বরং ভারতকে আগের গণহত্যা নিয়ে কথা বলার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, “ভারতের উচিত বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া, বিশেষ করে ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা বিষয়ে। ভারত কীভাবে এই ঘটনায় বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।”
ভারতের গণমাধ্যমের সমালোচনা করে নাহিদ ইসলাম জানান, তারা বাংলাদেশের সরকার নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার করছে, এবং ভারতের উচিত এই বিষয়ে সীমা নির্ধারণ করা। তিনি বলেন, আমরা চাই, তথ্যভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে সম্পর্ক উন্নয়ন করা হোক।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত এখনও ২০২৩ সালের গণহত্যার বিষয়ে কোনো স্পষ্ট অবস্থান নেয়নি, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে যখন গণহত্যা ঘটে, তখন ভারত যদি সহানুভূতিশীল হয়, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ সেটি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করবে।
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত যা কিছু ঘটেছে, তা আমাদের নজরে রয়েছে। তবে যদি সময়মতো পদক্ষেপ না নেওয়া হতো, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। দুর্গাপূজায় যেমন বলা হচ্ছিল, সহিংসতা হবে, কিন্তু আমরা যথাযথ আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং পূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সরকার সংখ্যালঘুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে, যা আগের সরকারের পক্ষে সম্ভব ছিল না। আগের সরকার শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা নিয়েছে, যার ফলে সংখ্যালঘুদের আস্থা হারিয়েছিল। আমরা সেই আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি।”
এছাড়া, বাংলাদেশে কিছু উগ্রপন্থি সংগঠনের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কখনও সহিংসতা বা উগ্রপন্থি সংগঠনগুলোর সমর্থন করে না। তারা গণতান্ত্রিক সরকার চায়। এসব উক্তি আওয়ামী লীগের প্রচারিত অসত্য তথ্যের অংশ।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ও বিনিয়োগ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা শুধু ভারতের সঙ্গে নয়, সব দেশের সঙ্গে প্রকল্প পর্যালোচনা করছি। এটি নিশ্চিত করতে চাই যে, কোনো প্রকল্পে দুর্নীতি বা বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু রয়েছে কিনা।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, বাংলাদেশ কখনও কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেনি, এবং সবকিছু আগের মতোই চলছে। আমরা চাই, দুই দেশ একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুললে তা উভয়ের জন্যই লাভজনক হবে।