প্রায় ছয় ঘণ্টার টানটান অভিযানের পর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে শুক্রবার (৯ মে) ভোর ৬টায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের সময় তার বাসার বাইরে বিপুলসংখ্যক সমর্থক ও এলাকাবাসী অবস্থান করছিলেন। পুলিশের ভ্যানে তোলার আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশে আইভী বলেন, “আমি জানি না কেন আমাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বলা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে, কিন্তু এখনো আমাকে তা দেখানো হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “২১ বছর ধরে নিরপেক্ষভাবে জনগণের সেবা দিয়েছি। যদি ‘জয় বাংলা’ বা ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ বলা অপরাধ হয়, তবে আমি গর্ব করে সেই অপরাধেই অপরাধী হতে চাই।”
আইভী প্রশ্ন তোলেন, “আমি কি কোনো সন্ত্রাসে জড়িত? আমি কি কাউকে আঘাত করেছি বা চাঁদাবাজি করেছি? তাহলে কীসের ভিত্তিতে, কাদের স্বার্থে, কোন ষড়যন্ত্রের কারণে আমাকে গ্রেপ্তার করা হলো? জনগণের কাছে এর জবাব চাই।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার যে সাম্য ও বৈষম্যহীনতার কথা বলে ক্ষমতায় এসেছে, সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না। “আমি তো পালিয়ে যাইনি, বাড়িতেই ছিলাম। তাহলে এভাবে গ্রেপ্তার করার যৌক্তিকতা কোথায়?”— প্রশ্ন রাখেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের দেওভোগ এলাকায় আইভীর বাসায় অভিযান চালায় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার একটি পুলিশ দল। খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় মানুষ বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন এবং সড়ক অবরোধ করে পুলিশের প্রবেশে বাধা দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েক ঘণ্টা ধরে আশপাশের মসজিদ থেকে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হলে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। রাত দেড়টা পর্যন্ত এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি অবস্থান করছিল।
স্থানীয়দের মতে, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। তাই তার গ্রেপ্তারের খবরে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে।
সূত্রঃ ইত্তেফাক