আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার মিলেই সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) কর্তৃক ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োহাভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই পরোয়ানা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে অস্বীকার করেছে, বিশেষ করে হামাস ও হিজবুল্লাহর মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আক্রমণের প্রেক্ষাপটে। প্রেসিডেন্ট মিলেই আরও দাবি করেছেন যে, ইসরায়েল এখনও সন্ত্রাসী আক্রমণের শিকার হচ্ছে এবং তার নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে জিম্মি করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্যকে বিকৃত করা হয়েছে এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর নৃশংসতা উপেক্ষা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম বুয়েনস আয়ার্স টাইমস এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আইসিসি ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে, কারণ গাজাবাসীদের বেঁচে থাকার ন্যূনতম চাহিদা মেটানো হয়নি এবং তারা মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
আইসিসির এই সিদ্ধান্তের পর নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলি জানিয়েছে যে, তারা যদি নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করতে পারে, তবে তাকে আইসিসির কাছে হস্তান্তর করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, হাঙ্গেরি এবং আর্জেন্টিনা নেতানিয়াহুর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আর্জেন্টিনার সরকারও এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিরোধিতা করে বলেছে, তারা ইসরায়েলের আইনগত প্রতিরক্ষার অধিকারকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার বিরোধিতা করে।
এদিকে, আর্জেন্টিনা দীর্ঘকাল ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং দেশটিতে লাতিন আমেরিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইহুদি ধর্মাবলম্বী মানুষ বসবাস করে। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট মাওরিসিও ম্যাকরি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার মিলেইও ২০২৩ সালে ইসরায়েল সফর করেন এবং আর্জেন্টিনার দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন, যা তার ইসরায়েলপন্থি মনোভাব এবং ইহুদি ধর্মের প্রতি আগ্রহের প্রতিফলন।