রাজনীতিবিদরা একে অপরের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন, আর বিপ্লবীদের জন্য ফাঁসির দড়ি নিকটবর্তী হচ্ছে: হাসনাত

“রাজনীতিবিদরা একে অপরের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন, অথচ বিপ্লবীদের জন্য ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে—এমন মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে তিনি নিজের ফেসবুক পেজে এ মন্তব্যটি প্রকাশ করেন।

পোস্টে তিনি লেখেন, “রাজনীতিবিদরা হাত মেলাচ্ছেন, আর বিপ্লবীদের ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে।” তবে, পোস্টে তিনি এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত বা ঘটনার সুনির্দিষ্ট উল্লেখ করেননি। তবে কমেন্ট সেকশনে অনেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ড এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে তাদের সন্দেহ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।

এই পোস্টের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা একদফা (শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি) আন্দোলন করছিলাম। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, সেই আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের সংবিধানপ্রীতি তৈরি হচ্ছে। এই দলেরই কিছু সদস্য এখন শেখ মুজিবের ছবি সরানোর ঘটনাকে নিয়ে আলোচনা করছেন, এমনকি মোস্তাকের সময়কার তুলনাও করছেন। এই বিষয়গুলো দুঃখজনক।”

তিনি আরও বলেন, রাজনীতিবিদরা এখন অগ্রজ ও অনুজের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছে। বর্তমান সংবিধানের অধীনে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতি তার অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা এই সংবিধানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলাম, কিন্তু এখন সেই সংবিধানের অধীনে রাষ্ট্রপতির কাছে সরকার শপথ নিচ্ছে।” এর মাধ্যমে, তিনি মনে করেন, বিপ্লব বা গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।

এদিকে, গত ১০ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলার ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “৭১ পরবর্তী ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো হয়েছে, যা আমাদের জন্য লজ্জার। আমরা ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তার ছবি সরাতে পারিনি, তবে জুলাই স্পিরিট যতদিন থাকবে, মানুষ তার পাশে থাকবে।”

এ ঘটনার পর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সোমবার (১২ নভেম্বর) এক অনুষ্ঠানে বলেন, “জাতীয় পর্যায়ে যাদের অবদান রয়েছে, তাদের সম্মান জানানো উচিত। কেউ অপরাধ করলে ইতিহাস ও জনগণ তা বিচার করবে। আওয়ামী লীগ যে সংকীর্ণ মনোভাব দেখাচ্ছে, বিএনপি তা নয়। মুজিবের ছবি সরানো উচিত হয়নি।”

তবে পরে রিজভী তার বক্তব্য সংশোধন করে জানান, তিনি মনে করেছিলেন, বঙ্গভবনের দরবার কক্ষ থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরানো হয়েছে, কিন্তু আসলে ছবিটি একটি অফিস কক্ষ থেকে সরানো হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *