যমুনা বহুমুখী সেতুতে অপসারণ করা হচ্ছে রেললাইন, বাড়ছে সড়কের পরিধি
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের বৃহত্তম যমুনা বহুমুখী সেতু থেকে অব্যবহৃত রেললাইন সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এতে সেতুর সড়ক অংশে অতিরিক্ত সাড়ে ৩ মিটার জায়গা যুক্ত হবে, যা উভয় পাশে একটি করে লেন সম্প্রসারণে সহায়ক হবে।
শুক্রবার সকাল থেকে সেতুর পূর্ব প্রান্ত, কালিহাতি অংশে রেললাইনের স্লিপারের নাট-বল্টু খুলে অপসারণ কাজ শুরু হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ও যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান, বিকল্প যমুনা রেলসেতু ১৮ মার্চ চালু হওয়ায় পুরনো সেতুর ওপর থাকা রেলপথের আর প্রয়োজন নেই। ফলে ধাপে ধাপে রেললাইন সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।
সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল জানান, রেললাইন সরিয়ে নেওয়ার ফলে সেতুতে অতিরিক্ত জায়গা তৈরি হবে, যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ মিটার। এতে প্রতিটি দিকের লেনে ১.৭৫ মিটার করে বাড়ানো সম্ভব হবে। রেললাইন অপসারণের পর প্রতিটি লেনের প্রস্থ ৮ মিটারে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রসঙ্গত, যমুনা সেতু ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন উদ্বোধন করা হলেও তখন সেখানে কোনো রেলপথ ছিল না। পরবর্তীতে দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর পাশে লোহার অ্যাঙ্গেল দিয়ে রেললাইন বসানো হয় এবং ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে উচ্চগতির ট্রেন চলাচলের কারণে ২০০৬ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দেয়। এরপর ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটারে সীমিত করা হয়, ফলে একটি ট্রেন সেতু পার হতে ২২ মিনিট সময় নিতো, যা ট্রেন চলাচলে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
এই সমস্যার সমাধানে যমুনা বহুমুখী সেতুর ৫০০ মিটার উত্তরে নতুন রেলসেতু নির্মাণ করা হয় এবং ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ তা চালু হয়। এরপরই পুরনো সেতু থেকে রেললাইন অপসারণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হয়, যাতে সড়ক সেতুর নিরাপত্তা ও যান চলাচল আরও সহজ হয়।
সূত্রঃ একুশে