অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ এবং নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে দেশে নানা আলোচনা চলছে। কিছু মানুষ দ্রুত নির্বাচন চায়, আবার অনেকেই সংস্কারের পর নির্বাচন দেখতে চান। এই বিষয়ে বিভিন্ন জরিপ পরিচালিত হচ্ছে, এর মধ্যে ভয়েস অব আমেরিকার জরিপও উল্লেখযোগ্য।
জরিপে দেখা গেছে, ৬১.১ শতাংশ মানুষ চান এক বছরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। অন্যদিকে, ৬৫.৯ শতাংশ মনে করেন, নির্বাচন আয়োজনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা উচিত। ১৮.৭ শতাংশ মানুষ চান আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন, এবং ৮.৬ শতাংশ এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চান। সবচেয়ে কম, ৫.৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নির্বাচন ৪ বছরের বেশি সময় পর হওয়া উচিত।
ভয়েস অব আমেরিকা ১৩ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে একটি জরিপ চালায়, যা ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী এক হাজার মানুষের মধ্যে করা হয়। জরিপের ফল অনুযায়ী, শহরের ৬০.৪% এবং গ্রামে ৬১.৪% মানুষ এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চাচ্ছেন। পুরুষদের মধ্যে ৫৭.৩% এবং নারীদের মধ্যে ৬৫% এই সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন চাচ্ছেন। তরুণদের (১৮-৩৪ বছর) মধ্যে ৬২.৪% এবং ৩৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে ৫৯.৮% এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চান।
এছাড়া, ১৮.৯% শহরের মানুষ এবং ১৮.৬% গ্রামাঞ্চলের মানুষ চান দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন। ৩৫ বছর বা তার বেশি বয়সের মধ্যে ২২.৪% এবং তরুণদের মধ্যে ১৫.২% এই সময়সীমায় নির্বাচন চাচ্ছেন। ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন চান ১০.৩% শহরের এবং ৮% গ্রামের মানুষ। আর ৪ বছরের বেশি সময় পর নির্বাচন চান, ৬.২% শহরের এবং ৫.৭% গ্রামের মানুষ।
বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচন শীঘ্রই আয়োজনের জন্য দাবি জানালেও, অন্তর্বর্তী সরকার এখনও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ হওয়ার পরই নির্বাচন আয়োজন করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, নির্বাচনের তারিখ উপদেষ্টা পরিষদই ঘোষণা করবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সংস্কার শেষ হলে রোডম্যাপ দ্রুতই প্রস্তুত করা হবে, তবে কিছু সংস্কারের জন্য নির্বাচন বিলম্বিতও হতে পারে।
এদিকে, ছাত্র সংগঠন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জানায়, তারা মনে করে সংস্কারের কাজ শেষ না হলে নির্বাচন হলে নতুন করে ‘ফ্যাসিবাদ’ সৃষ্টি হতে পারে।